“এক শিশু নদীর বুকে ভেসে গিয়েছিল, আর একদিন সেই শিশুই দাঁড়িয়েছিল ফেরাউনের মুখোমুখি।”
এই শিশুটিই ছিলেন হযরত মূসা (আ.)—একজন মহান নবী, যিনি ছিলেন দৃঢ় বিশ্বাস, ধৈর্য আর অলৌকিক ঘটনার প্রতীক।
হযরত মূসা (আ.) জন্মগ্রহণ করেন মিশরে, এক সময় যখন ফেরাউন বনি ইসরাঈলের পুরুষ শিশুদের হত্যা করছিল। তার মাকে আল্লাহ নির্দেশ দেন নবজাতক মূসাকে একটি ঝুড়িতে রেখে নদীতে ভাসিয়ে দিতে। আশ্চর্যের বিষয়, শিশুটিকে নিজেই গ্রহণ করে ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া, যিনি তাকে লালন-পালন করেন রাজপ্রাসাদে।
আল্লাহর প্রেরিত নবী হিসেবে দায়িত্ব:
যৌবনে মূসা (আ.) ফেরাউনের এক লোককে অনিচ্ছায় হত্যা করে মিশর ত্যাগ করেন এবং মাদিয়ান নামক এলাকায় আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি নবী শোয়াইব (আ.)-এর মেয়েকে বিয়ে করেন এবং গৃহস্থ জীবন শুরু করেন। একদিন একটি আগুনের দিকে এগিয়ে গিয়ে তিনি আল্লাহর আহ্বান পান। আল্লাহ তাঁকে নবুয়ত দান করেন এবং ফেরাউনের কাছে গিয়ে সত্যের বার্তা দিতে বলেন।
ফেরাউনের সঙ্গে মুখোমুখি:
মূসা (আ.) তাঁর ভাই হারুন (আ.)-কে নিয়ে ফেরাউনের দরবারে যান এবং বলেন, “তুমি আল্লাহর ইবাদত করো, নিজেকে উপাস্য মনে কোরো না।” ফেরাউন তাঁর কথা অস্বীকার করে এবং বিভিন্ন জাদুকর এনে তাঁর অলৌকিক ক্ষমতা যাচাই করার চেষ্টা করে। মূসা (আ.)-এর লাঠি সাপ হয়ে যাওয়া, নীল নদ রক্তে পরিণত হওয়া—এসব ছিল আল্লাহর চিহ্ন।
বনি ইসরাঈলের মুক্তি:
শেষে ফেরাউনের যুলুম থেকে বাঁচাতে আল্লাহ মূসা (আ.)-কে বনি ইসরাঈলকে নিয়ে মিশর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। ফেরাউন তাঁদের ধাওয়া করে। কিন্তু মূসা (আ.) আল্লাহর আদেশে লাঠি দিয়ে সাগরে আঘাত করলে পথ তৈরি হয়। বনি ইসরাঈল পার হয়, আর ফেরাউন সাগরে ডুবে যায়।
তৌরাত এবং তওহিদের বার্তা:
মূসা (আ.) সীনাই পাহাড়ে আল্লাহর সঙ্গে কথা বলেন এবং তৌরাত লাভ করেন। তিনি বারবার তাঁর জাতিকে শিরকের বিরুদ্ধে সাবধান করেন এবং একত্ববাদের বার্তা পৌঁছান।
হযরত মূসা (আ.)-এর জীবনী আমাদের শিক্ষা দেয়—আল্লাহর প্রতি আস্থা আর ধৈর্য থাকলে কোনো শক্তিই সত্যকে রুখে দিতে পারে না।
খবর ৩৬৫ দিন, স্টাফ রিপোর্ট