আপনি কি জানেন ইফতার শুরু করতে খেজুরই একমাত্র উপায় নয়?
রমজান মাস এলেই ইফতারে খেজুর খাওয়া যেন একটি সাধারণ অভ্যাস হয়ে দাঁড়ায়। অনেকেই ভাবেন, খেজুর না খেলে হয়তো সুন্নত পালন হলো না। তবে ইসলাম কী বলে? ইফতারে খেজুরের গুরুত্ব কতটুকু? অন্য খাবার দিয়ে ইফতার করা কি জায়েজ? চলুন, জেনে নিই বিস্তারিত।
খেজুর দিয়ে ইফতারের গুরুত্ব ও সুন্নত
🔹 হাদিস অনুযায়ী:
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ ইফতার করবে, সে যেন খেজুর দ্বারা ইফতার করে, কেননা এতে বরকত রয়েছে।” (মেশকাত ১৮৯৩)
অন্য এক হাদিসে পাওয়া যায়, “রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজের আগে কয়েকটি কাঁচা খেজুর খেয়ে ইফতার করতেন। যদি কাঁচা খেজুর না থাকত, তাহলে শুকনো খেজুর, আর যদি সেটাও না থাকত, তাহলে কয়েক ঢোক পানি পান করতেন।” (তিরমিজি ৬৩২)
📌 খেজুর সুন্নত, তবে বাধ্যতামূলক নয়। যদি খেজুর না থাকে, তাহলে পানি বা অন্য কোনো হালকা খাবার দিয়েও ইফতার করা যায়।
খেজুর কেন সুন্নত হিসেবে খাওয়া হয়?
✔ শরীরে দ্রুত শক্তি জোগায়: খেজুরে প্রচুর গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ থাকে, যা দীর্ঘ সময় না খাওয়ার পর শরীরকে দ্রুত এনার্জি দেয়।
✔ হজমে সহায়তা করে: খেজুরে থাকা ফাইবার হজম সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
✔ স্বাস্থ্যকর ও সহজলভ্য: তৎকালীন আরবে এটি সহজলভ্য ছিল এবং রাসুল (সা.) ও সাহাবারা এটি নিয়মিত খেতেন।
📌 তাই খেজুর খাওয়া বরকতপূর্ণ ও সুন্নত, কিন্তু কেউ যদি অন্য কোনো খাবার দিয়ে ইফতার করে, তাহলে কোনো গুনাহ নেই।
ইফতার ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: কী করা উচিত?
বর্তমানে বাজারে খেজুরসহ বিভিন্ন ইফতার সামগ্রীর দাম বেড়ে গেছে। অনেকেই হয়তো ইফতারের জন্য খেজুর কিনতে পারবেন না।
✅ ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে:
- সুন্নত পালনের উদ্দেশ্যে এক বা দুইটি খেজুর খেলেই বরকত পাওয়া যায়।
- খেজুর কিনতে সমস্যা হলে পানি বা অন্য কোনো খাবার দিয়েও ইফতার করা যায়।
- ব্যবসায়ীদের উচিত ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রি করা, কারণ রাসুল (সা.) বলেছেন, “সত্যবাদী ও আমানতদার ব্যবসায়ী জান্নাতে নবীদের সঙ্গে থাকবে।”
📌 খেজুরের দাম বেশি হলে পরিমাণ কমিয়ে খান, তবুও সুন্নত পালন হবে। তবে এটি বাধ্যতামূলক নয়।
📢 তাহলে এবার কী করবেন?
📌 ইফতার খেজুর দিয়ে শুরু করুন, যদি সম্ভব হয়।
📌 যদি খেজুর না থাকে, তাহলে পানি বা অন্য খাবার দিয়ে ইফতার করুন।
📌 সুন্নতের অনুসরণে বরকত থাকলেও এটি বাধ্যতামূলক নয়।
খবর ৩৬৫ দিন, স্টাফ রিপোর্ট