চীনের প্রভাব কি কেবল বিনিয়োগে সীমাবদ্ধ, নাকি দক্ষিণ এশিয়ায় তার রয়েছে আরও গভীর কৌশলগত উদ্দেশ্য?
দক্ষিণ এশিয়া—যেখানে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মালদ্বীপ, ভূটানসহ ৮টি দেশ অবস্থিত—সেই অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এখন আর অস্বীকার করার উপায় নেই। অর্থনীতি থেকে শুরু করে কূটনীতি, সামরিক সহযোগিতা থেকে সফট পাওয়ার—চীন তার উপস্থিতি জোরালোভাবে জানান দিচ্ছে।
বিশ্ব রাজনীতিতে বড় খেলোয়াড় হয়ে উঠতে চায় চীন, আর তার জন্য দক্ষিণ এশিয়া হলো এক কৌশলগত ক্ষেত্র। “বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ” (BRI) প্রকল্পের আওতায় চীন ইতিমধ্যে বহু দেশকে ঋণ ও অবকাঠামো বিনিয়োগের মাধ্যমে বেঁধে ফেলেছে।
চীনের প্রভাবের কিছু বড় উদাহরণ:
🔹 শ্রীলঙ্কা: হাম্বানটোটা বন্দর চীনের হাতে ৯৯ বছরের ইজারায়।
🔹 পাকিস্তান: ৬০ বিলিয়ন ডলারের CPEC প্রকল্পে ব্যস্ত।
🔹 বাংলাদেশ: বিদ্যুৎ, রেল, রাস্তা—সবখানেই চীনা ঋণ ও কারিগরি সহায়তা।
কূটনৈতিক সম্পর্কেও চীন সজাগ:
ভারত ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ দেশই এখন চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক বন্ধনে আগ্রহী। চীন নিজেকে “ডেভেলপমেন্ট পার্টনার” হিসেবে তুলে ধরলেও, এর পেছনে রয়েছে কৌশলগত প্রভাব বিস্তারের চেষ্টাও।
সামরিক সহযোগিতায়ও চীনের ভূমিকা স্পষ্ট:
🔸 পাকিস্তান ও বাংলাদেশে অস্ত্র সরবরাহ
🔸 প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি আদান-প্রদান
🔸 দক্ষিণ চীন সাগর থেকে ভারত মহাসাগরে নজরদারি বৃদ্ধির প্রয়াস
তরুণদের কাছে পৌঁছাতে চীনের সফট পাওয়ার:
Confucius Institute, স্কলারশিপ, টিকটক, WeChat, চীনা সিরিজ ও অ্যাপ—সব কিছুতেই চীন তার সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিতে আগ্রহী।
⚠️ চ্যালেঞ্জ ও সমালোচনা:
ভারত এই অঞ্চলে চীনের আগ্রাসী প্রবেশকে হুমকি হিসেবে দেখছে। শ্রীলঙ্কার মতো দেশ ঋণের ভারে ন্যুব্জ। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ চীনের প্রভাব মোকাবেলায় বিকল্প উন্নয়ন পরিকল্পনা আনছে।
চীনের প্রভাব দক্ষিণ এশিয়ায় শুধু অর্থনৈতিক নয়, এটি এখন কৌশলগত শক্তির খেলা। এই প্রভাব ভবিষ্যতে যে কোনো সময় বন্ধুত্বের চেয়ে আধিপত্যে রূপ নিতে পারে। তাই, এখন সময় কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষার।
👉 দক্ষিণ এশিয়ার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আপনি কী ভাবছেন? খোলামেলা মতামত দিন খবর৩৬৫.com-এ।
খবর ৩৬৫ দিন, স্টাফ রিপোর্ট