রমজানের শেষ সময়ে মুসলিমদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব কী? শুধুই রোজা শেষ করা নাকি গরিবদের জন্য কিছু করা?
ফিতরা বা যাকাতুল ফিতর ইসলামের এক অনন্য দান, যা রমজানের অন্যতম শিক্ষা—সহানুভূতি ও মানবসেবার প্রতীক। এটি এমন একটি ইবাদত, যা রোজার শেষে গরিব-দুঃস্থদের জন্য নির্ধারিত।
📖 পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন,
“তোমাদের সম্পদে গরিব-অসহায়দের অধিকার রয়েছে।” (সূরা আজ-জারিয়াত: ১৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন—
“যে ব্যক্তি পেট পুরে খায়, অথচ তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে, সে প্রকৃত ঈমানদার নয়।” (বায়হাকি)
“ফিতরার মূল উদ্দেশ্য”
📌 গরিবদের সহায়তা
রমজানের শেষে ঈদের আনন্দ যেন সমাজের প্রত্যেক মানুষ ভাগ করে নিতে পারে, সে জন্য ফিতরা প্রদান করা হয়।
📌 রোজার পরিশুদ্ধতা
হাদিসে এসেছে, ফিতরা গোনাহের পাপ থেকে মুক্তির একটি মাধ্যম। এটি রোজার পূর্ণতা আনে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে সহায়ক হয়।
📌 সামাজিক সাম্যতা সৃষ্টি
ফিতরা মুসলিম সমাজে দারিদ্র্য দূর করতে এবং গরিবদের মুখে হাসি ফোটাতে সাহায্য করে।
“ফিতরা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিধান”
✅ কার ওপর ফিতরা ওয়াজিব?
🔹 প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমের ওপর এটি ওয়াজিব।
🔹 পরিবারের ছোট-বড়, নারী-পুরুষ, সবার পক্ষ থেকে দিতে হবে।
✅ কাকে ফিতরা দেওয়া যাবে?
🔹 গরিব, মিসকিন, এতিম, দুঃস্থ ও অসহায় মানুষদের দেওয়া যায়।
🔹 আত্মীয়স্বজন ও পরিচিত দুঃস্থদের আগে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
✅ কী দিয়ে ফিতরা দেওয়া উত্তম?
🔹 খাদ্যদ্রব্য যেমন গম, চাল, খেজুর, কিসমিস, আটা ইত্যাদি
🔹 কোনো কারণে খাদ্যদ্রব্য দেওয়া সম্ভব না হলে, সমপরিমাণ টাকা দান করাও জায়েজ।
✅ ফিতরার পরিমাণ কত?
🔹 একজনের জন্য ১ সা’ (প্রায় ২.৫ কেজি গম বা ৩ কেজি চাল)
🔹 অথবা সমমূল্যের অর্থ।
✅ ফিতরা কখন দেওয়া উচিত?
🔹 ঈদের নামাজের আগেই ফিতরা দেওয়া উত্তম।
🔹 দেরি করলে এটি শুধু সাধারণ সদকা হয়ে যাবে।
“ফিতরার গুরুত্ব কেন বুঝতে হবে?”
ফিতরা শুধু একটা দান নয়, এটি একটি দায়িত্ব। এটি শুধু গরিবের হকই নয়, বরং আমাদের জন্য আত্মশুদ্ধির উপায়ও। ঈদের আনন্দ তখনই পূর্ণ হয়, যখন সমাজের সকল মানুষ একসাথে হাসতে পারে।
📢 এবার আপনি কী করবেন? ফিতরা আদায় করেছেন তো? যদি না করে থাকেন, তাহলে এখনই গরিবের হক আদায় করুন!
খবর ৩৬৫ দিন, স্টাফ রিপোর্ট