কখনো ভেবেছেন—একজন রাজপুত্র সবকিছু ত্যাগ করে কেন ঘর ছেড়েছিলেন? কেমন সেই জীবনযাত্রা যা তাঁকে ‘বুদ্ধ’ বা ‘জ্ঞানী’ বানিয়েছিল?
🕉️ বৌদ্ধ ধর্মের জন্ম:
বৌদ্ধ ধর্মের জন্ম হয় খ্রিষ্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতকে, গৌতম বুদ্ধের বাণী ও দর্শনের মাধ্যমে। সেই সময় ভারতে প্রচলিত কঠোর যজ্ঞ, ব্রাহ্মণ্যবাদ এবং জাতপাতের অব্যবস্থার বিপরীতে দাঁড়িয়েছিল বুদ্ধের শিক্ষা।
এই ধর্ম মানুষকে নিজের কর্ম, নৈতিকতা ও জ্ঞান দিয়ে মুক্তির পথ দেখায়—যেখানে নেই কোনো ঈশ্বরকেন্দ্রিক উপাসনা, বরং রয়েছে আত্মশুদ্ধির দিকনির্দেশ।
🧘♂️ গৌতম বুদ্ধের জীবনী সংক্ষেপে:
🔹 জন্ম:
গৌতম বুদ্ধের জন্ম খ্রিস্টপূর্ব ৫৬৩ সালে, বর্তমান নেপালের লুম্বিনীতে। তাঁর পিতার নাম রাজা শুদ্ধোদন এবং মাতার নাম মায়া দেবী। জন্মের সময় নাম ছিল সিদ্ধার্থ।
🔹 রাজপুত্র থেকে ত্যাগী সন্ন্যাসী:
রাজপ্রাসাদে বিলাসী জীবন কাটালেও তিনি দেখলেন—জীবন মানে শুধু সুখ নয়, আছে জরা, ব্যাধি ও মৃত্যু। এই দৃশ্যগুলো তাঁকে নাড়া দেয়। মাত্র ২৯ বছর বয়সে তিনি রাজ্য, পরিবার, সন্তান সবকিছু ত্যাগ করে সত্য অনুসন্ধানে বের হন।
🔹 জ্ঞানপ্রাপ্তি:
ছয় বছরের কঠিন সাধনার পর তিনি বোধিগাছের নিচে বসে গভীর ধ্যানের মাধ্যমে ‘বোধি’ বা জ্ঞান লাভ করেন। তখন থেকেই তিনি ‘বুদ্ধ’ নামে পরিচিত হন।
🔹 প্রচার:
জ্ঞান লাভের পর তিনি সারাজীবন ‘চারে আর্যসত্য’ ও ‘অষ্টাঙ্গিক পথ’ প্রচার করে গেছেন। তিনি সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজাদের কাছেও শান্তি, অনুশাসন ও করুণার বার্তা পৌঁছে দেন।
🔹 মৃত্যু (পরিনির্বাণ):
৮০ বছর বয়সে কুশীনগরে তাঁর দেহাবসান ঘটে। বৌদ্ধরা এটিকে “পরিনির্বাণ” বলেন—অর্থাৎ চূড়ান্ত মুক্তি।
📜 বুদ্ধের শিক্ষা সংক্ষেপে:
-
চারটি আর্যসত্য: দুঃখ, দুঃখের কারণ, দুঃখের নাশ, দুঃখ নিবারণের পথ
-
অষ্টাঙ্গিক পথ: সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তা, বাক্য, কর্ম, জীবিকা, প্রচেষ্টা, মনোযোগ, এবং ধ্যান
-
অহিংসা, করুণা ও সমতা—এগুলিই বৌদ্ধ দর্শনের মূল ভিত্তি।
💬 অনুপ্রেরণামূলক উদ্ধৃতি:
“নিজের ওপর জয় করাই সবচেয়ে বড় বিজয়।” – গৌতম বুদ্ধ
গৌতম বুদ্ধের জীবন থেকে অনুপ্রেরণা নিতে আজ থেকেই নিজেকে প্রশ্ন করুন—আপনি কি নিজের দুঃখ, লোভ ও অহংকারকে জয় করতে প্রস্তুত?
বৌদ্ধ ধর্ম ও ইতিহাস নিয়ে আরও জ্ঞানমূলক লেখা পড়তে ভিজিট করুন: khobor365.com
খবর ৩৬৫ দিন, স্টাফ রিপোর্ট