আপনি কি জানেন, ড জাকির নায়েকের আসল নাম এবং তাঁর দেশ কোথায়? কি কারণে তিনি আলোচনায়?
ড. জাকির নায়েক: পরিচিতি, উদ্দেশ্য ও বাংলাদেশ সফর সম্ভাবনা
🏷️ পুরো নাম ও দেশ
ড জাকির নায়েক-এর পুরো নাম Zakir Abdul Karim Naik।
তিনি জন্মেছিলেন ১৮ অক্টোবর ১৯৬৫ তারিখে মুম্বাই, ভারতবর্ষে।
📡 Peace TV এবং উদ্দেশ্য
তিনি হলেন Islamic Research Foundation (IRF) ও Peace TV এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি।
Peace TV প্রথম চালু হয় ২১ জানুয়ারি ২০০৬-এ, যা একটি ধর্মীয় ও শিক্ষামূলক (edutainment) স্যাটেলাইট চ্যানেল হিসেবে কাজ করে।
উদ্দেশ্য হলো ইসলামের শিক্ষা, comparative religion (ধর্ম তুলনামূলক ব্যাখ্যা) ও ধর্মীয় সংলাপ প্রচার করা।
📚 ইসলামের প্রচার ও বক্তৃতা শৈলী
ড. জাকির নায়েক comparative religion, অর্থাৎ “বিভিন্ন ধর্মের মধ্যকার পার্থক্য ও মিল” ব্যাখ্যা করার জন্য পরিচিত।
তিনি সাধারণত প্রশ্ন-উত্তর পদ্ধতিতে আলোচনায় অংশ নেন, যেখানে দর্শকের প্রশ্নের ভিত্তিতে উত্তর দেন এবং বাণী ব্যাখ্যা করেন।
তাঁর বক্তৃতা অনেক সময় “Islam vs Other Religions” বিষয় নিয়ে হয়—বাইবেল, গীতা, পুরাণ ইত্যাদির হাদিস ও বর্ণনার সঙ্গে ইসলাম তুলনাসম্পর্কিত আলোচনায়।
📍 বর্তমানে কোথায় আছেন এবং বাংলাদেশ সফর?
বর্তমানে ড. জাকির নায়েক মালয়েশিয়ায় বাস করছেন — তিনি ২০১৬ সাল থেকে সেখানে স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে থাকছেন।
তিনি ভারত থেকে বহিষ্কৃত বা মামলার অভিযোগের ফলে মালয়েশিয়াতে আশ্রয় নিয়েছেন।
নিউজ সূত্রে বলা হচ্ছে, তিনি বাংলাদেশ সফর করবেন, এবং একটি বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপলক্ষে আগামী নভেম্বর ২৮-এ ঢাকায় আগমন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তবে এটি নিশ্চিত নয় এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নিরাপত্তার কারণ থাকতে পারে, কারণ বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে Zakir Naik-কে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না।
⚡ সাম্প্রতিক বিতর্ক
-
২০২৪ সালে তিনি বলেছিলেন যে “যে অপরাধীরা (যেমন ধর্ষণ ও হত্যা) আন্তরিকভাবে তওবা করলে আল্লাহ তাদের ক্ষমা করতে পারেন”, যা একটি বড় বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
-
একটি বক্তৃতার সময় পাকিস্তানে, এক পশ্তুন মেয়ের প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়েছিল যে তিনি মেয়েটিকে “gaslight” করেছিলেন—মিডিয়াতে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে।
-
মালয়েশিয়াতে একবার তিনি বর্ণবৈষম্য সংক্রান্ত মন্তব্য করেছিলেন, যা দেশটির কিছু মন্ত্রী তাকে বিতাড়িত করার দাবিতে একত্রিত হয়েছিলেন।
-
২০১৭ সালে তিনি মালয়েশিয়ায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ১০ ঘণ্টা ধরে ছিলেন বর্ণবাদের অভিযোগে, পরে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন।
🌐 আন্তর্জাতিক প্রভাব
-
মালয়েশিয়াতে তার উপস্থিতি ও বক্তৃতা রাজনীতির সঙ্গে মিশে যায়—তার জনপ্রিয়তা রাজনৈতিক দলগুলিরও আলোচনার বিষয়।
-
তার অবস্থান ও বিতর্ক ভারত-মালয়েশিয়া দুই দেশের কূটনৈতিক বিষয়েও প্রভাব ফেলেছে, যেমন নতুন সরকার গঠনের সময় ইস্যুটি আলোচনায় আসে।
-
কাউন্টার-এক্সট্রিমিজম প্রজেক্টের মত সংগঠন তার “influence” বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে, বিশেষ করে ২০১৬ সালের ঢাকার হামলার সঙ্গে তার নাম কয়েকটি সোর্সে যুক্ত করা হয়েছে।
⚠️ সতর্কতা ও বিবেচ্য বিষয়
-
-
বাংলাদেশের সরকার ২০১৬ সালে Peace TV-র ডাউনলিংক পারমিশন বাতিল করে দিয়েছিল।
-
অনেক দেশেই তার চ্যানেল নিষিদ্ধ আছে কারণ তার বক্তব্যকে “provocative” বা ধর্মীয় উত্তেজনা ছড়ানোর সম্ভাব্যতার দিক থেকে বিবেচনা করা হয়েছে।
-
রাজনৈতিক ও সুরক্ষা বিষয়গুলিও তার সফরকে জটিল করে তোলে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ এমন কাউকে প্রবেশ অনুমোদন দেবে না যিনি প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারেন।
-
এছাড়া নায়েকের কিছু বক্তব্য কখনো সমালোচিত হয়েছে নীরবতা, ধর্মীয় বিরোধিতা ও সামাজিক উত্তেজনা সৃষ্টি করার দিক দিয়ে।
-