আপনার কি মনে পড়ে, বসন্ত এলেই কোকিলের সুরেলা ডাক কানে বাজত? আজকাল কি সেই ডাক কমে গেছে? প্রকৃতির এই পরিবর্তনের কারণ কী?
বসন্ত এলেই বাংলার প্রকৃতি ভরে উঠত কোকিলের মধুর সুরে। ‘কুহু কুহু’ ডাক যেন বসন্তেরই বার্তা বহন করত। কিন্তু এখন? কই, সেই চিরচেনা ডাক তো আর আগের মতো শোনা যায় না! কোকিল কি তবে প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে?
প্রকৃতির পরিবর্তন ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে কোকিল
গ্রামের মেঠোপথে কিংবা শহরের গাছপালায় বসন্তের সকালে কোকিলের ডাক একসময় প্রাণ জুড়িয়ে দিত। কিন্তু আধুনিক নগরায়ণ, বন উজাড়, জলবায়ু পরিবর্তন, ও বসবাসের পরিবেশ সংকটের কারণে আজ কোকিলের দেখা পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠছে।
কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে কোকিল?
জীববিজ্ঞানীরা বলছেন, কোকিল সাধারণত পরিযায়ী পাখি হলেও বসন্তের সময় বাংলায় তাদের আধিপত্য বেশি দেখা যেত। কিন্তু শহরগুলোর অতি-নগরায়ণ, বৃক্ষনিধন, কীটনাশকের ব্যবহার এবং খাদ্যের সংকটের কারণে কোকিল আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।
বারহাট্টা সরকারি ডিগ্রি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত জীববিজ্ঞান প্রভাষক জগলুল হায়দার বলেন,
“বসন্তের প্রধান আকর্ষণই ছিল কোকিলের ডাক। প্রকৃতির এই সুন্দর সুর হারিয়ে গেলে পরিবেশের ভারসাম্যও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র স্কুল ও কলেজের বাংলা বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক বিজয় চন্দ্র দাস বলেন,
“কোকিল শুধু বসন্তের সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, আমাদের সংস্কৃতিরও অংশ। আজকাল সাহিত্য আর গানে কোকিলের কথা থাকলেও বাস্তবে তাদের আর আগের মতো দেখা যায় না।”
কেন কোকিলের সংখ্যা কমছে?
- নগরায়ণ ও বন উজাড়: শহর ও গ্রামাঞ্চলে গাছ কাটার কারণে কোকিলের বাসস্থান কমে গেছে।
- খাদ্যের সংকট: কোকিল প্রধানত কীটপতঙ্গ ও ছোট ফল খেয়ে বেঁচে থাকে, কিন্তু কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহারে তাদের খাবার কমে যাচ্ছে।
- জলবায়ু পরিবর্তন: তাপমাত্রা ও ঋতুর পরিবর্তনের ফলে কোকিলের প্রজনন ও বিচরণের ধরন বদলে গেছে।
এখন কী করা উচিত?
কোকিলের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ জরুরি। নতুন প্রজন্মের কাছে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে।
আপনার এলাকায় কি এখনো কোকিলের ডাক শোনা যায়? প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করতে আমরা কী করতে পারি? কমেন্টে জানান!
খবর ৩৬৫ দিন, স্টাফ রিপোর্ট