জুলাইয়ের অভ্যুত্থান কি শুধুই একটি ছাত্র আন্দোলন, নাকি এটি বাংলাদেশে নতুন সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক চিন্তার সূচনা? তরুণদের এই জাগরণ আমাদের সামনে কী সম্ভাবনা তৈরি করেছে?
২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক রাজনীতির নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। ‘কেমন বাংলাদেশ চাই?’—এই প্রশ্ন ঘিরে এখন সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিতর্ক জমে উঠেছে। তরুণ প্রজন্ম নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুনভাবে ভাবছে, আলোচনা করছে এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তনের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে।
এ অভ্যুত্থান শুধু রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, বরং এটি এক নতুন সাংস্কৃতিক আদর্শের জন্ম দিয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনামলে গণতন্ত্র সংকুচিত হয়ে পড়েছিল। গুম, খুন, দমন-পীড়ন এবং বিভাজনের রাজনীতির মাধ্যমে একটি দল নিজেদের ‘বিকল্পহীন’ হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু জুলাই আন্দোলন সেই ধারার বিরুদ্ধেই দাঁড়িয়েছে।
এই অভ্যুত্থান তরুণদের মধ্যে যে পরিবর্তনের ভাবনা তৈরি করেছে, তা বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। অনেকেই বলছেন, এটি ‘জাতীয়তাবাদ বনাম গণতন্ত্রের’ লড়াই। যেখানে তরুণরা বিভাজনের রাজনীতির বিপরীতে সংবিধানের মৌলিক গণতান্ত্রিক কাঠামোকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে।
এই আন্দোলন একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—বাংলাদেশের তরুণ সমাজ পুরনো রাজনৈতিক মতাদর্শের দাসত্ব করতে রাজি নয়। বরং তারা এমন একটি সমাজ চায় যেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার এবং সাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে। সুতরাং, এটি শুধুই একটি রাজনৈতিক উত্থান নয়, বরং সাংস্কৃতিক চেতনার নবজাগরণও।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই জাগরণ কতটা টেকসই হবে? তরুণদের এই শক্তিকে কি একটি সুসংগঠিত রাজনৈতিক কাঠামোতে রূপ দেওয়া সম্ভব? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর সময়ই দেবে। তবে একথা স্পষ্ট—জুলাই আন্দোলন এক নতুন রাজনৈতিক ভাষার সূচনা করেছে, যা আগামীর বাংলাদেশ গঠনের ভিত্তি হতে পারে।
আপনার মত কী? আপনি কি মনে করেন এই অভ্যুত্থান বাংলাদেশে একটি নতুন সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দিগন্ত উন্মোচন করবে? আপনার মতামত শেয়ার করুন!
খবর ৩৬৫ দিন, স্টাফ রিপোর্ট