ইসরায়েলি আগ্রাসন, ফিলিস্তিনে দমন-পীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষ ও প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে। এই বয়কট কেবল একটি রাজনৈতিক অবস্থান নয়, এটি একটি মানবিক ও নৈতিক আন্দোলন, যেখানে ভোক্তারা তাদের ক্রয়ক্ষমতাকে প্রতিবাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন।
বয়কটের কারণ:
ইসরায়েলি সরকারের ফিলিস্তিনিদের ওপর বারবারের সামরিক হামলা, গাজায় অবরোধ, বসতিস্থাপন কার্যক্রম, চিকিৎসা ও খাদ্য সংকট এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা অভিযোগ বহু বছর ধরেই চলছে। এসব অন্যায়ের প্রতিবাদে ‘BDS (Boycott, Divestment and Sanctions)’ নামে একটি বৈশ্বিক আন্দোলন গড়ে উঠেছে, যার লক্ষ্য হচ্ছে— ইসরায়েলের প্রতি অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা।
যেসব পণ্য সাধারণত বর্জনের তালিকায় থাকে:
- টেক পণ্য: HP, Intel, Motorola
- কনজিউমার গুডস: SodaStream, Ahava, Sabra
- সুপার মার্কেট ও ক্যাফে চেইন: কিছু কফিশপ ও চেইন রেস্টুরেন্ট
- নির্দিষ্ট কৃষিপণ্য ও প্রসেসড ফুডস: ইসরায়েলি তারিখ, ফলমূল, ওয়াইন ইত্যাদি
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে:
বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি এবং দেশটিতে ইসরায়েলি পণ্য আমদানি-রপ্তানিও নিষিদ্ধ। তবে অনেক আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড, যাদের উৎপাদন বা বিনিয়োগ ইসরায়েলে রয়েছে, সেসব পণ্য সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে দেশে প্রবেশ করতে পারে। তাই সচেতন ভোক্তা হিসেবে নিজেকে অবগত রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
নৈতিক দিক:
এই বয়কট শুধু একটি মুসলিম পরিচয় থেকে নয়, বরং বিশ্বমানবতার দৃষ্টিকোণ থেকেও অনেকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি টাকা যদি কারও দমন-পীড়নকে সমর্থন করে, তাহলে সেই খরচ থেকে বিরত থাকাও এক ধরনের প্রতিবাদ।
আপনি যদি ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে চান, তাহলে আজ থেকেই সচেতন হোন— আপনার অর্থ কোথায় যাচ্ছে? গুগলে খুঁজে নিন আপনার প্রতিদিনের ব্যবহার্য পণ্যের উৎপত্তি। প্রয়োজনে বিকল্প পণ্য বেছে নিন। ছোট একটি পদক্ষেপ, কিন্তু বড় একটি প্রভাব ফেলতে পারে।
আজই একটি ছোট সিদ্ধান্ত নিন—ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করুন, বিকল্প খুঁজুন। আপনার একটা ক্লিক, একটা পণ্য বদল হয়তো এক শিশুর বাঁচার কারণ হতে পারে!
খবর ৩৬৫ দিন, স্টাফ রিপোর্ট