সবাইকে আনন্দ দিতে গিয়ে আপনি কি কখনও এমন কিছু বলে ফেলেছেন যা কাউকে কষ্ট দিয়েছে? কখন কোথায় হাস্যরস করা উচিত, তা কি আমরা জানি?
আমরা জানি হাসি আনন্দের প্রতীক। তবে ইসলাম কি বলে? সব হাসি কি পূণ্য? নাকি কিছু হাসি আমাদের অজান্তেই গুনাহের পথে নিয়ে যায়?
মানুষের জীবনে হাসি-আনন্দ খুব জরুরি। দুঃখ, হতাশা, একাকীত্ব—সব ভুলিয়ে দিতে পারে এক চিলতে প্রফুল্লতা। বিজ্ঞানও বলছে, হাস্যরস শরীর ও মনকে সুস্থ রাখে। কিন্তু এ আনন্দ যদি কাউকে আঘাত দেয়? ইসলাম কি চুপ থাকে তখন? একটুখানি ভুল রসিকতা যদি কারও মন ভেঙে দেয় বা পাপের কারণ হয়, তবে সেটি কি আর চিত্তবিনোদন থাকে?
হাস্যরস মানুষের জীবনকে প্রাণবন্ত রাখে। মনোবিজ্ঞানী ও চিকিৎসকেরাও বলেন—হাসি হৃদয় ও শরীর দুইয়ের জন্য উপকারী। কিন্তু ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে, কীভাবে সেই হাসিকে মানবিক এবং পূণ্য কাজের অংশ বানানো যায়।
ইসলামের দৃষ্টিতে হাস্যরস:
ইসলাম এমন ধর্ম, যা মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাকে গুরুত্ব দেয়। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (স.) নিজেও রসিকতা করতেন—তবে তার প্রতিটি রসিকতায় থাকত সত্যতা, ভালোবাসা এবং কারও মনে কষ্ট না পাওয়ার সতর্কতা।
নিয়ন্ত্রিত রসিকতা মানেই সুন্দর সম্পর্ক:
একটি সীমার ভেতরে থাকা রসিকতা পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, এমনকি সহকর্মীদের সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নত করে। ইসলামে বলা হয়েছে—হাসো, তবে গুনাহ ছাড়া। কৌতুকে যেন তুচ্ছতা, অপমান বা মিথ্যার মিশ্রণ না থাকে।
একটি সুন্দর ঘটনা:
একবার প্রিয় নবী (স.) ও হজরত আলী (রা.) খেজুর খাচ্ছিলেন। নবীজি তার বিচিগুলো আলী (রা.)-এর সামনে রাখেন, পরে মজা করে বলেন, “তোমার সামনে এত বিচি! নিশ্চয়ই অনেক খাও!” আলী (রা.) জবাব দিলেন, “আপনি তো বিচিসহ খেয়ে ফেলেছেন!” —এই মজার গল্পে যেমন আছে রসিকতা, তেমনি আছে ভালোবাসা ও সম্মান।
যা একদম এড়ানো উচিত:
-
কারও শারীরিক গঠন, ধর্ম, পরিবার বা ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ঠাট্টা
-
অতিরিক্ত হাস্যরস যা সময় ও পরিবেশ অনুযায়ী বেমানান
-
মিথ্যা বলে মানুষকে হাসানো
-
কৌতুক করে অপমান করা
হাসুন, তবে সচেতনভাবে। এখনই নিজেকে প্রশ্ন করুন—আপনার হাসির পেছনে কারো অশ্রু লুকানো তো নেই? ইসলামের এই দিকনির্দেশনা শেয়ার করুন সবার সাথে—আনন্দ ছড়াক, গুনাহ নয়।
খবর ৩৬৫ দিন, স্টাফ রিপোর্ট